মরিঙ্গা পাউডার কি?
প্রাকৃতিক পুষ্টিগুণের আধার সজনে সম্পর্কে আমাদের সবার ধারণা আছে। সজনের বৈজ্ঞানিক নাম হচ্ছে মরিঙ্গা ওলেইফে। এটি আমাদের দেশের গ্রাম অঞ্চলের অতি সাধারণ একটি ভেষজ উদ্ভিদের নাম। সজনের ডাটা আমাদের দেশে সবজি হিসেবে খাওয়া হয়।
মরিঙ্গা বা সজনেকে একটি মাল্টিভিটামিন সুপার ফুড বলা হয় এবং এর গাছ মিরাকেল ট্রি হিসেবে সুপরিচিত। সজনে পাতার গুঁড়ায় অকল্পনীয় পুষ্টি উপাদান থাকে যা আমাদের গতানুগতিক খাদ্য থেকে অনেক বেশি। বিশেষ করে এতে সকল ধরণের অ্যামিনো অ্যাসিড সহ বিভিন্ন প্রকারের খনিজ উপাদান থাকে। তাছার মরিঙ্গা পাউডারে ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ভিটামিন এ, ভিটামিন সি সহ অন্যান্য উপাদান থাকে।
সর্বোপরি এই খাবার দেহের জন্য অনেক বেশি পুষ্টি সরবরাহ করে যা অনেকগুলো খাবার এক সাথে খেলেও পাওয়া যায় না। অর্থাৎ মরিঙ্গা পাউডার দেহের জন্য উপকারী পুষ্টি উপাদানে ভরপুর যে কারণে একে সুপারফুড হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। নিচে এই গুঁড়া খাওয়ার নিয়ম ও এর উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।
সজনে পাতা গুড়া খাওয়ার নিয়ম
মরিঙ্গা গুঁড়া একটি স্বাস্থ্যকর ডায়েট নির্ভর খাদ্য উপাদান। একে একাধারে বিভিন্ন খাবারের সাথে মিশিয়ে খাওয়া যায়। নিচে সজনে পাতা গুঁড়া খাওয়ার বিভিন্ন পদ্ধতি সম্পর্কে আলোচনা করা হলো।
চা এর সাথে মিশিয়ে
সজনে পাতা খাওয়ার সব থেকে সহজ এবং প্রচলিত পদ্ধতি হচ্ছে একে চায়ের সাথে মিশিয়ে খাওয়া। কারণ যখন মরিঙ্গা গুঁড়া চায়ের সাথে মেশানো হয় তখন তা গলে সব পুষ্টিগুণ পানির সাথে মিশে যায়। যখন সেই পানীয় গ্রহণ করা হয় তখন তা দেহের জন্য উপকারী কাজে লাগে।
শরবত বানিয়ে
সজনে পাতার গুঁড়ার সঙ্গে খাঁটি মধু ও লেবুর পানি মিশিয়ে অনেক স্বাস্থ্যকর শরবত তৈরি করা যায়। নিয়মিত এই শরবত খেলে শরীরের ওজন ঠিক থাকে এবং দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। অন্যদিকে মরিঙ্গা পাউডারের শরবত অনেক প্রচলিত খাদ্য।
স্মুদি হিসেবে
স্মুদি আমাদের শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি সরবরাহ করে। এই খাবারের সাথে যখন এক বা দুই চামচ সজনে পাতার গুঁড়া মেশানো হয় তখন তা আরও বেশি পুষ্টিকর হয়। এই কারণে সকালের স্মুথিতে মরিঙ্গা মিশিয়ে খাওয়া যেতে পারে।
সালাদ ড্রেসিং হিসেবে
সালাদ একটি স্বাস্থ্যকর ডায়েট যা দেহের ওজন নিয়ন্ত্রণ করে এবং বায়োলজিক্যাল প্রপার্টিজ নিয়ন্ত্রণ করে। সচরাচর সালাদের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করার জন্য এতে মেয়নিজ ব্যবহার করা হয়। মরিঙ্গা পাউডার মেয়নিজ হিসেবে অনেক ভালো কাজ করে। উপর্যুপরি এই গুঁড়া সালাদের মান বৃদ্ধি করে।
ওটমিল বা সিরিয়ালের সাথে
ওটমিলের সাথে মরিঙ্গা পাউডার মিশিয়ে খাওয়া অনেক উপকারী। কারণ যখন মরিঙ্গা পাউডার মেশানো হয় তখন ওটমিলের মধ্যে থাকা পুষ্টিগুণ বৃদ্ধি পায় এবং তা থেকে স্বাস্থ্য উপকারিতা পাওয়া সম্ভব হয়।
মশলা হিসেবে
খাবার রান্না করার সময় মশলা হিসেবে ব্যবহার করার জন্য মরিঙ্গা পাউডার একটি ভালো অপশন হতে পারে। বিশেষ করে কোন ভাজি, পপকর্ন ইত্যাদির সাথে মশলা হিসেবে মরিঙ্গা পাউডার খাওয়া যেতে পারে।
স্যুপের সাথে
সচরাচর সুপের সাথে বিভিন্ন উপাদান যোগ করে এর পুষ্টিগুণ বৃদ্ধি করা হয়। সে দিক থেকে সুপের সাথে মরিঙ্গা পাওয়ার গ্রহণ করা একটি উপকারী সিদ্ধান্ত। এই কারণে রেস্টুরেন্টে সুপের সাথে মরিঙ্গা পাউডার ব্যবহার করার একটি সুবর্ণ সুযোগ আছে। এতে একাধারে যেমন স্যুপের স্বাদ বৃদ্ধি পায় তেমনি এর পুষ্টিগুণ বৃদ্ধি পায়।
ভাতের সাথে
আমরা বাঙ্গালিরা ভাতের সাথে ঝোল সহ সজনের ডাটা খেতে অনেক পছন্দ করি। তাছাড়া সজনে পাতার গুঁড়া দিয়ে তৈরি বিভিন্ন খাবার ভাতের সাথে মিশিয়ে খাওয়া আমাদের কাছে একটি সাধারণ খাবার। বিশেষ করে গরম ভাতের সাথে সজনে পাতার গুঁড়া মেশানো তরকারি যেমন পুষ্টিগুণে ভরপুর হয় তেমনি স্বাদে হয় অনন্য।
সজনে পাতা গুড়া খাওয়ার উপকারিতা
আমরা পূর্বে জেনেছি যে সজনে পাতার গুঁড়া একটি সুপারফুড যাতে রয়েছে সকল ধরনের উপকারী পুষ্টিগুণ। এখানে নিয়মিত মরিঙ্গা পাউডার খেলে যে যে উপকারিতা পাওয়া যাবে সে সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
মরিঙ্গা পাউডারে প্রচুর পরিমাণ এন্টিঅক্সিডেন্ট থাকে। এতে থাকা অ্যামাইনো অ্যাসিড দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির পাশাপাশি সকল ধরনের শারীরিক দুর্বলতা দূর করে। অন্যদিকে এই গুঁড়ায় থাকা ভিটামিন এবং খনিজ উপাদান শরীরের অনুপস্থিত পুষ্টি চাহিদা পূরণ করে।
হজম বৃদ্ধি করে
সজনে পাতার গুঁড়ায় দ্রবণীয় এবং অদ্রবণীয় খাদ্য আঁশ থাকে। এই খাদ্য আঁশ হজম প্রক্রিয়ায় সহায়তাকারী এনজাইম গুলোকে সচল করে। এতে লিভারের স্বাস্থ্য যেমন ঠিক থাকে তেমনি হজম প্রক্রিয়া সুস্থভাবে সম্পন্ন হয়।
পেটের গ্যাস দূর করে
বেশি তেল জাতীয় খাবার খেলে পেটে আসিডিটি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। পেটের গ্যাস দূর করার জন্য ওষুধের থেকে প্রাকৃতিক উপায় অবলম্বন করা সব থেকে বেশি নিরাপদ। এই দিক বিবেচনা করলে মরিঙ্গা পাউডার পেটের আসিডিটি, প্রদাহ, গ্যাস ইত্যাদি সমস্যা দূর করার জন্য অনেক ভালো কাজ করে।
শর্করা নিয়ন্ত্রণ করে
রক্তে শর্করা থাকলে তা ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ এবং হার্টের সমস্যার সৃষ্টি করে। মরিঙ্গা পাউডার প্রাকৃতিক উপায়ে রক্তে থাকা এই শর্করা নিয়ন্ত্রণ করে। এতে ডায়াবেটিস হওয়ার সম্ভাবনা একে বারে কমে যায়। অন্যদিকে শর্করা দ্বারা ঘটিত সম্ভাব্য রোগ নিরাময় হয়।
হাড় মজবুত করে
সজনে পাতার গুঁড়ায় প্রচুর পরিমাণে খনিজ উপাদান থাকে। এগুলো আমাদের দেহের কর্মক্ষমতা পরিচালিত করে। বিশেষ করে ক্যালসিয়াম দেহের হাড় সুগঠিত করতে সাহায্য করে। প্রকৃতিতে পাওয়া ক্যালসিয়াম বাত ব্যথা, হাড়জোর ব্যথাসহ সকল ধরনের হাড়ের সমস্যা দূর করে।
শারীরিক শক্তি বৃদ্ধি করে
শারীরিক দুর্বলতার অন্যতম প্রধান কারণ হল অপুষ্টি। সজনে পাতার গুঁড়া প্রাকৃতিকভাবে দেহের জন্য প্রয়োজনীয় সকল ধরনের পুষ্টি উপাদানের বিপুল সমাহার। নিয়মিত সঠিক পদ্ধতি বিশেষ করে খাঁটি মধুর সাথে মরিঙ্গা পাউডার গ্রহণ করলে খুব তাড়াতাড়ি শরীরের পুষ্টির পরিমাণ বৃদ্ধি পায় এবং শারীরিক দুর্বলতা দূর হয়।
ব্লাড প্রেশার নিয়ন্ত্রণ করে
মরিঙ্গা পাউডারে থাকে পটাশিয়াম লবণ যা দেহের কোনো ক্ষতি করে না। অন্যদিকে সজনে পাতার গুঁড়া শরীরের রক্ত সঞ্চালন ধারা অব্যাহত রাখে। এতে ব্লাড প্রেশার নিয়ন্ত্রণ হওয়ার পাশাপাশি রক্তের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়। অর্থাৎ রক্ত বৃদ্ধি করতে এবং ব্লাড প্রেশার নিয়ন্ত্রণ করতে নিয়মিত মরিঙ্গা পাউডার গ্রহণ করা জরুরি।
কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করে
আমরা জানি এলডিএল কোলেস্টেরল হার্টের অনেক ক্ষতি করে। এই কারণে যত কম এই ক্ষতিকর কোলেস্টেরল গ্রহণ করা হয় তত উপকার পাওয়া যায়। অন্যদিকে নিয়মিত সজনে পাতার গুঁড়া খেলে তা রক্তে থাকা এই ক্ষতিকর কোলেস্টেরল দূর করে ও উপকারী কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি করে। এতে একাধারে রক্তের মধ্যে থাকা উপাদান গুলো সঠিকভাবে বণ্টন করা থাকে এবং হার্টের সমস্যা দূর হয়।
Anonymous –
ধুলোবালি মুক্ত এত ফ্রেশ মরিঙ্গা পাউডার এর আগে আমি কখনও পাইনি
ধন্যবাদ sunamfood কে
Sunam Food –
thank you so much
Anonymous –
একদম দুলোভালি মুক্ত ফ্রেশ পাউসারটা
আলহামদুলিল্লাহ
Sunam Food –
thank you so much
Anonymous –
আমার ওজন নিয়ন্ত্রণ এর জন্য গ্যাস্টিক এর জন্য মরিঙ্গা পাউডার খেয়েছি এখনো খাচ্ছি।ভালো উপকার পেয়েছি,